আরজি কর-কাণ্ডের তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্তে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বারবার অভিযোগ উঠছে যে, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে, যা তদন্তকে জটিল করে তুলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সিবিআই কতদূর এগিয়েছে এই মামলায়? আসল অপরাধীদের শিকড়ে পৌঁছাতে পারবে কি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? এই প্রশ্নেই মুখ খুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য
সুকান্ত মজুমদার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, “তথ্যপ্রমাণ না থাকলে সিবিআই হোক বা এফবিআই, কেউই অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারবে না। ঘটনার পর থেকে সব তথ্যপ্রমাণ মুছে ফেলা হয়েছে। এই কারণে আমরা উদ্বিগ্ন যে, আদৌ অপরাধীরা ধরা পড়বে কিনা। ক্রাইমের জায়গায় যদি হাজার মানুষের পায়ের চিহ্ন পাওয়া যায়, সেখানে সঠিক তথ্যপ্রমাণ কীভাবে মিলবে? ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, একাধিকবার দেহের চারপাশে চাদরের রং পরিবর্তন করা হয়েছে। সত্যটা কী, তা ভগবানই জানেন।”
দ্রুত ময়নাতদন্তের চাপের অভিযোগ
অন্যদিকে, আরজি কর-কাণ্ডে দ্রুত ময়নাতদন্তের জন্য চাপ দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাস। তার দাবি, নিহতের কাকা পরিচয়ে এক ব্যক্তি ময়নাতদন্ত দ্রুত না করলে ‘রক্তগঙ্গা’ বইবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন। এই হুমকির পেছনে রয়েছেন পানিহাটি পুরসভার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর, যিনি পরে তৃণমূলে যোগ দেন এবং তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষের ঘনিষ্ঠ।
শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স (পূর্বে টুইটার)-তে লিখেছেন, “ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছেন। তিনি বলেছেন, ময়নাতদন্তে দেরি হলে রক্তগঙ্গা বইবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দ্রুত দেহ সৎকার করা হয়েছে, যেখানে নিহতের আত্মীয় না হয়েও শ্মশানের নথিতে সই করেছেন এক ব্যক্তি।”
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে চর্চা
আরজি কর-কাণ্ডের এই বিতর্কিত ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে জনমানসে শুরু হয়েছে তর্ক-বিতর্ক। রাজ্যের বিরোধী দলগুলো তদন্তে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের আশঙ্কা প্রকাশ করছে। অপরদিকে, দ্রুত ময়নাতদন্ত এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আরও জটিলতার সৃষ্টি করেছে।
উপসংহার
তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সিবিআই কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। ময়নাতদন্তের হুমকি ও দ্রুত সৎকারের মতো বিষয়ে প্রশ্ন উঠলেও, প্রকৃত অপরাধীরা আদৌ ধরা পড়বে কিনা, সে বিষয়ে জল্পনা চলছে।